bKash / বিকাশে প্রতারিত হলে যা করবেন ?



বর্তমান সময়ে দ্রুততম সময়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানোর অন্যতম জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো মোবাইল ব্যাংকিং। আর এই মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমেই প্রতিদিন ঘটছে অহরহ প্রতারণার ঘটনা। একটি চক্র অত্যন্ত সু-কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে বহু টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং বিশেষ করে বিকাশের মাধ্যমেই এ প্রতারণা ঘটছে সবচেয়ে বেশি। সারা দেশে বিকাশের এ রকম হাজারো চক্র আর প্রতারক সিন্ডিকেট রয়েছে। যেভাবে চলে এই প্রতারণা: মূলত ক্ষুদে বার্তা এসএমএসের মাধ্যমেই এই কাজটি করা হয়। ভুল করে বিকাশে টাকা চলে গেছে এরকম কথা বলে সেই অংকের টাকা ফেরৎ পাওয়ার আশায় গ্রাহকের ফোনে কল দিয়ে অনেক আকুতি মিনতি করে টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। সম্প্রতি বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার কারণে একটি চক্রকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে মিজানুর রহমান নামে সেই প্রতারক চক্রেরই তাদের প্রতারণার কৌশল ও কাজের ধরণ নিয়ে দিয়েছেন বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতারক মিজানের ভাষ্য: আমাদের একজন লিডার থাকে। তার অধীনেই কাজ করি আমরা। আমাদের দলের সদস্য সংখ্যা ২০-২৫ জন। যারা সব সময় বিকাশের দোকানের আশপাশে ঘুরাঘুরি করি। কোন ব্যক্তি বিকাশ করতে এলে কৌশলে যে নম্বরে বিকাশ করা হচ্ছে সে নম্বরটি জেনে তৎক্ষনাৎ লিডারকে ফোনে ঐ নম্বরটি জানিয়ে দেই। তিনি প্রথমে ঐ নম্বরে ফোন করে কাতর স্বরে বলেন- ভাই একটু আগে আপনার ফোনে ভুল করে বিকাশে আট হাজার টাকা চলে গেছে। দয়া করে একটু ব্যালেন্স চেক করুন। কিছুক্ষণ পরেই আবার ঐ ব্যক্তিকে ফোন করে বলা হয় ব্যালেন্স চেক করেছেন? তিনি তখন বলেন- না আমার ফোনে তো পাঁচ হাজার টাকাই এসেছে। ভুল করে অন্য কোন টাকা আসেনি”। ব্যস কেল্লাফতে! আমাদের আসলে এতটুকুই জানার প্রয়োজন থাকে। অ্যামাউন্ট জানার সাথে সাথে ওই নম্বরে ভূয়া ফরওয়ার্ডকৃত আট হাজার টাকার একটি এসএমএস চলে যাবে। পরে আবারও আমাদের লিডার তাকে ফোন দিয়ে বলে- ভাই দয়া করে এখন একটু ব্যালেন্সটা চেক করুন। পরে দ্বিতীয় বারের মেসেজ দেখে ওই টার্গেটকৃত ব্যক্তি ব্যালেন্স চেক না করে এসএমএস দেখেই বলেন- হ্যাঁ, তিন হাজার টাকা বেশি এসেছে। তখন অনেক আকুতি মিনতি করে ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়- ভাই আমি একজন গরীব বিকাশ দোকানদার। দয়া করে টাকাটা ফেরৎ দিন। না হলে আমার অনেক ক্ষতি হবে। তখন টার্গেটকৃত ব্যক্তি ব্যালেন্স চেক না করেই সাথে সাথে কথিত তিন হাজার টাকা পুনরায় প্রতারকের মোবাইলে বিকাশ করে দেন। উল্লেখ্য মিজানের বাড়ী ফরিদপুর জেলার মধুখালী জেলার ডুমাইল গ্রামে। বিকাশে টাকা পাঠানোর সময় যেসব বিষয় লক্ষণীয়: (১) অবশ্যই ভালো ও বিশ্বস্ত বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা পাঠাবেন। (২) টাকা পাঠানোর সময় লক্ষ্য রাখবেন, পাশের কেউ আপনাকে অনুসরণ করছে কিনা। এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন। (৩) আপনার প্রেরিত টাকার অংক সঙ্গে সঙ্গেই বা টাকা পাঠানোর আগে প্রাপককে জানিয়ে দিন। (৪) দ্বিতীয়বার মোবাইলে কোন মেসেজ আসলে সেটি যাচাই করুন এবং ব্যালেন্স চেক করুন। (৫) কোন ব্যক্তি বিকাশের টাকা ভাঙ্গাতে আসলে সে ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হোন প্রয়োজনে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি রেখে দিন। (৬) প্রতিটি লেনদেনের পর বিকাশ থেকে প্রেরিত মেসেজের মাধ্যমে পাওয়া ব্যালেন্স ইনফরমেশন এবং আপনার কাঙ্খিত ব্যালেন্সের মিল আছে কিনা তা যাচাই করে নিন। (৭) লটারী জেতা, পুরস্কার বা প্রতিযোগিতা এই ধরণের কোন মেসেজ বা ফোন কলে সাড়া দিবেন না। (৮) খেয়াল রাখতে হবে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠালে মেসেজের উপরে অবশ্যই bkash লেখা থাকবে। কিন্তু ফরোয়ার্ডকৃত মেসেজে কখনোই bkash লেখা থাকে না। মোবাইল ব্যাংকিং-এ প্রতারিত হলে যা করবেন: মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কেউ প্রতারিত হলে প্রতারণাকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। এছাড়া সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের চালু হওয়া Hello CT অ্যাপস এ গিয়ে সাইবার ক্রাইম অথবা আন্তঃদেশীয় অপরাধ/জালিয়াতি অপশনে ঢুকে আপনার অভিযোগটি সরাসরি লিখুন। লেখক: সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা।-

Comments

Popular posts from this blog

টাইপিং শিখতে চান ? দ্রুত টাইপিং শেখার সবচেয়ে সহজ উপায় । Download Typing Master Pro

YouTube Community Guidelines বাংলাই পড়ুন।

জেনে রাখুন যেভাবে স্মার্টফোন / মোবাইল বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা পেতে পারবেন !